ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

‘সিগারেট কম্পানিগুলো শত শত কোটি টাকা কর ফাঁকি দিচ্ছে’

175145saber_hossain_kalerkantho_pictureনিউজ ডেস্ক :::

ব্রিটিশ-আমেরিকান টোব্যাকো কম্পানির পরিচালক পদে থাকা সরকারের প্রতিনিধিদের পদ ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সরকার দলীয় সংসদ সদস্য ও ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন (আইপিইউ) প্রেসিডেন্ট সাবের হোসেন চৌধুরী। তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা সত্ত্বেও সিগারেটের উপর কাঙ্ক্ষিত করারোপ করা হয়নি। বরং কর প্রদানের ক্ষেত্রে স্লাব (কর স্তর) বহাল থাকায় সিগারেট কম্পানিগুলো শত শত কোটি টাকা কর ফাঁকি দিচ্ছে। তাই সরকারের কোন প্রতিনিধির সিগারেট কম্পানির পরিচালক পদে থাকা সমচীন নয়।

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়ার সভাপতিত্বে সাধারণ আলোচনায় আরো অংশ নেন সরকার দলীয় সংসদ সদস্য কর্নেল (অব.) ফারুক খান, কামরুল আশরাফ খান, ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ, নুরুল ইসলাম সুজন, মাহজাবিন খালেদ ও নাসিমা ফেরদৌসি এবং বিরোধী দলীয় সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু।

তামাকের ক্ষেত্রে সুনির্দ্দিষ্ট করনীতি না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী তামাকমুক্ত বাংলাদেশের ঘোষণা দিলেও বাজেটে তার প্রতিফলন নেই। প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও এক্ষেত্রে কর স্তর তুলে দেওয়া হয়নি। আর এই স্তরের সুযোগ নিয়ে কিছু কিছু কোম্পানী রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে। এর আগে এনবিআর ব্রিটিশ টোব্যাকো কোম্পানীকে ডিমান্ড নোট দিয়েছিলো তারা ৭০০ কোট টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে। পরে সেই কোম্পানী আদালতে গিয়েছিলো। আদালত তাদের রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ায় কথা উল্লেখ করে ওই ৭০০ কোটি টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলো। পরে তারা উচু স্তর থেকে নীচু স্তরে চলে আসে।

রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া সত্ত্বেও সিগারেট কম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করার সমালোচনা করে সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, কিভাবে এসব বড় বড় কোম্পানীকে ধরবেন? ব্রিটিশ অ্যামেরিকান টোব্যাকোতে বাংলাদেশ সরকারের ১৩ শতাংশ শেয়ার আছে। যেখানে বোর্ড অব ডিরেক্টরে ৫ জন সচিব পর্যায়ের পরিচালক আছেন। তারা আবার অডিট করে, নিরীক্ষা করে। তাহলে কি দাঁড়ালো? একটি কম্পানিতে যেখানে সরকারের শেয়ার আছে, তারা রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে। এটা লজ্জাজনক। সরকারের মালিকানা টোব্যাকো কোম্পানীতে থাকা উচিত নয়। আমাদের যেসকল পরিচালক আছে, তাদের সেখান থেকে সরে যাওয়া উচিত। অন্যথায় এই কর ফাঁকির সাথে আমাদের জড়িয়ে ফেলা হবে।

সরকার দলীয় এই সংসদ সদস্য বলেন, গত বছর তামাকের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব করে ২০৭ জন সংসদ সদস্য অর্থমন্ত্রীকে পিটিশন দিয়েছিলেন। এছাড়া অর্থমন্ত্রী এনবিআর-এর একটি সম্মেলনে বলেছিলেন তামাকে স্তর ভিত্তিক কর তুলে দেওয়া হবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, যেখানে মানুষের আয় শতকরা ১২ শতাংশ বাড়ছে। মূল্যস্ফিতি প্রায় ৭ শতাংশ সেখানে যদি এক শতাংশ মূল্য বৃদ্ধি করি, তাহলে তামাকের দাম কিন্তু বাড়ালো না। তামাকের দাম কমিয়ে দেওয়া হলো। তিনি আরো বলেন, তামাকজাত দ্রব্যের কারণে প্রতিবছর এক লাখ লোক মারা যাচ্ছে। আমাদের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জন করতে হলে অবশ্যই বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে।

সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, এই বছরে বাংলাদেশে দু’টি বড় সম্মেলন হতে যাচ্ছে। আইপিইউ ও সিপিএ সম্মেলন। এর মধ্য দিয়ে আমরা সারা বিশ্বকে বাংলাদেশে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। এতে সারা বিশ্বে বাংলাদেশ সন্মানিত হবে। যেটা আমাদের অনেক বেশি সন্মানের।

পাঠকের মতামত: